ছাড়ে-সৌন্দর্যে শতরঞ্জি
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় দর্শনার্থীর ভিড় যেন একদিকেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ঘুরে ঘুরে সবাই একটি প্যাভেলিয়নই খুঁজছে আর তা হলো শতরঞ্জি। কী আছে এই শতরঞ্জিতে প্রশ্ন করতেই হিমু নামের একজন দশণার্থী উত্তর দিলেন, ছাড় আর সৌন্দর্য।
ভিড় ঠেলে ঢুকতেই চোখে পড়লো একটি কার্পেট এর দোকান। সুন্দর কারুকাজ করা আর বর্ণিল রঙে তৈরি বিভিন্ন আকারের কাপের্ট আর ম্যাট। দেখলেই মন ভরে যায়। প্রায় প্রত্যেকটিতেই রয়েছে কিছু না কিছু ছাড়।
এ প্যাভেলিয়নের পণ্য সম্পূর্ণ দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহার করে হাতে বোনা। শতরঞ্জি এক সময় এ অঞ্চলের ঐতিহ্য ছিল। বহু বছর আগে জমিদাররা এগুলো ব্যবহার করতেন। মূলত রংপুরে এ শতরঞ্জি তৈরি হতো। প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে এ শিল্প। তাই হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য আবারও ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে কারুপণ্য রংপুর লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান।
বাণিজ্যমেলায় এবার দেশি-বিদেশি সব ধরনের স্টল, প্যাভিলিয়ন ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন পণ্যে ছাড় দিচ্ছে। অন্য সব প্যাভিলিয়নের মত শতরঞ্জির পণ্যে দেওয়া হচ্ছে বিশেষ ছাড়। এখানে ৬শ’টাকার একটি বাথম্যাট কিনলে সঙ্গে থাকছে তিনটি ফ্রি।
মেলায় শতরঞ্জির প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখা যায়, শতরঞ্জির প্লেসম্যাটে ৩০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া শতরঞ্জির অন্য পণ্যে ২০ থেকে শুরু করে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় মিলছে। ১০০, ১৫০, ২০০ ও ৩০০ টাকা মূল্যের একটি পাটের ডোরম্যাট কিনলে নগদ আরও একটি ফ্রি দেওয়া হচ্ছে।
কাঁচা পাট, ঝুট, পাটের সুতালি, রিসাইকেল সুতাসহ দেশি কাঁচামালে তৈরি ২০ থেকে ২৫ ধরনের পণ্য মিলছে শতরঞ্জিতে। এর মধ্যে অন্যতম ডোরম্যাট, ফ্লোরম্যাট, বাথম্যাট, বেডসাইড ম্যাট, বেণীম্যাট, প্লেসম্যাট ও পর্দাসহ নানা পণ্য।
হাতে নানা ধরনের কারুকাজ করা দরজা ও জানালার ডিভাইডার পর্দাও মিলছে ১০ শতাংশ ছাড়। মানভেদে এসব দরজার ডিভাইডার পর্দা ৮৮০, ৯০০ ও ১১২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। মনের মতো ঘর সাজাতে শতরঞ্জি প্যাভিলিয়নে ছুটে আসছেন গৃহিণীরা।
এ বিষয়ে শতরঞ্জির প্যাভিলিয়ন ইন-চার্জ আশিকুর রহমান জানান, ঘর সাজাতে ক্রেতারা এখানে প্রতিনিয়তই ছুটে আসছেন। সৌন্দর্য আর ছাড়ের কারণে আরও বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে ক্রেতারা।
প্যাভিলিয়নের একজন কর্মচারি জানান, আমাদের পণ্য দেখতে ও কিনতে গৃহিণী ক্রেতা বেশি আসছেন। বর্তমানে শতরঞ্জি ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, এশিয়াসহ বিশ্বের ৩৮টি দেশে রফতানি হচ্ছে।
জান্নাতুল ফেরদৌসী নামের একজন দর্শনার্থী জানান, এত সুন্দর কারুকাজ করা কাপের্টগুলো সত্যিই নজরকাড়ার মতো। তাছাড়া ছাড় আছে জানতে পেরেই এসেছি।
কাপের্ট কিনেছেন কি না জানতে চাইতেই তিনি বলেন,‘ আমি ৩৫০ টাকায় ২টা কার্পেট কিনে ৩টা ফ্রি পেয়েছি। ভাবছি পরে এসে আবার কিনে নিয়ে যাব’।
প্রতিক্ষণ/এডি/জেডএমলি